ছাত্রলীগের আবদার না রাখায় কলেজ অধ্যক্ষ অবনী ভূষণসহ তিন শিক্ষককে নাজেহাল করা হয়েছে। এ সময় তারা প্রায় চার ঘন্টা ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। অপরদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ভর্তির তালিকা নিয়ে প্রায় আধা ঘন্টা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিকবিদিক ছোটাছুটি শুরু করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খুলনার সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজে এ ঘটনা ঘটে। এতে করে দূর-দূরান্ত থেকে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা চরম বিপাকে পড়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে নগরীর খানজাহান আলী রোডে অবস্থিত সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজে এইচএসসিতে মেধা তালিকা অনুযায়ী গণিত বিভাগের রুমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ মোঃ রেজা, অমিতাভ, মনা, সৈকত, জিয়া ও ফখরুলের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন নেতাকর্মী ভর্তি কমিটির প্রধান বিচক্ষণ ম-লকে তাদের দেয়া তালিকা অনুযায়ী ভর্তি করতে বলে। তিনি তাদের দাবি অনুযায়ী ভর্তি না করায় তারা শিক্ষকদের সাথে কথা কাটাকাটি করে। এক পর্যায়ে বিচক্ষণ মন্ডলের উপর চড়াও হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে রসায়ন বিভাগের প্রধান ওয়াহিদুজ্জামান ও কমার্স বিভাগের প্রধান আব্দুল মান্নান এগিয়ে আসলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করে। এসময় শিক্ষকদের কাছে থাকা ভর্তির টাকা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে কলেজ অধ্যক্ষ অবনী ভূষণ এগিয়ে গেলে তাকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নাজেহাল করে। সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বেলা একটা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ছাত্রলীগ ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে রাখে। এসময় ভর্তি কমিটি জরুরি মিটিংয়ে বসে। মিটিং শেষে আবারও ভর্তি কার্যক্রম শুরু করে। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজা ৭০/৮০টি মার্কসীট এবং অপর গ্রুপের নেতা জিয়া শতাধিক মার্কসীট নিয়ে কমিটির কাছে ভর্তির জন্য চাপ দেয়। এ নিয়ে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। প্রায় আধাঘন্টা ধরে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় ক্যাম্পাসে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মুহুর্তের মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ক্যাম্পাস থেকে চলে যায়। খবর পেয়ে খুলনা সদর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরবর্তীতের আবার ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অভিতাভ ঘোষ বলেন, ভর্তি কার্যক্রম চলাকালে মেধা তালিকার বাইরে কমিটির প্রধান বিচক্ষণ ম-ল দু’জনকে ভর্তি করান। আমরা এই প্রতিবাদ করে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেই। ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কথা সে অস্বীকার করেন।
এব্যপারে ভর্তি কমিটির প্রধান ও গণিত বিভাগের হেড বিচক্ষণ ম-ল বলেন, ছাত্রলীগের অযৌক্তিক আবদার পূরণ না করায় কলেজে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তাদের দাবি না রাখায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।