ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের ছাত্র এহসান রফিককে মারধর ও নির্যাতনের দায়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সাত নেতাকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারে বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করেছে সিন্ডিকেট। এর মাধ্যমে সাত ছাত্রলীগ নেতার একজন আজীবন এবং ছয়জন বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার হলেন। এছাড়া অপর একটি ঘটনায় পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সহপাঠীর বিরুদ্ধে অশ্লীল মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
উপাচার্য বলেন, ‘শৃৃঙ্খলা কমিটির দেয়া সুপারিশগুলো আমরা গ্রহণ করেছি। একটি হচ্ছে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায়। অন্যটি সহপাঠীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অশ্লীল মন্তব্য করা।’
তিনি বলেন, ‘অপরাধ করলে কাউকে ছাড় নয়। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য সাজা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারই প্রথম। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আরও সচেতন হবে বলে মনে করি।’
এহসান রফিককে মারধরের ঘটনার মূল হোতা শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ওমর ফারুককে (মার্কেটিং বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ) স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া দুই বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সদস্য সামিউল ইসলাম সামি (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ) ও সদস্য আহসান উল্লাহ (দর্শন বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ), সহ-সম্পাদক রুহুল আমিন বেপারি (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ), উপ-সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল (উর্দু বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ) এবং সহ-সম্পাদক ফারদিন আহমেদ মুগ্ধ (লোক প্রশাসন বিভাগ, দ্বিতীয় বর্ষ)। প্ররোচণার দায়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলামকে (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, চতুর্থ বর্ষ) এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি ছাত্রলীগের এই সাত নেতাকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল।
এদিকে সহপাঠীকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অাপত্তিকর মন্তব্য করার দায়ে বহিষ্কৃতরা হলেন আশিকুর রহমান, হযরত আলী, মোস্তাক আল মামুন পিয়াল, মো. জহুরুল ইসলাম এবং রাশেদ আহমেদ। এরা সবাই দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত ও ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টা পর্যন্ত এহসান রফিককে মারধর করে শাখা ছাত্রলীগের নেতারা। এসময় তার চোখের কর্ণিয়া মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তাক্ত হয় শরীরের বিভিন্ন অংশ।
মারধরের পর চিকিৎসকের পরামর্শে ভুক্তভোগীকে হাসপাতালেও ভর্তি করেনি শাখা ছাত্রলীগের নেতারা। উল্টো হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির কক্ষে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ করে এহসান। এসময় তাকে কোনো খাবারও দেয়া হয়নি। ঘটনা বাইরে প্রকাশ না করতে বিভিন্ন ধরনের হুমকিও দেয়া হয়।