জঙ্গিবাদ নিয়ে দেশজুড়ে চলমান অস্থিরতা ও প্রতিরোধের মধ্যে রাজনীতিমুক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন ছাত্রলীগের একজন নেতা। গত রোববার মধ্যরাতের এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এরপর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান অস্থিরতার ধারাবাহিকতায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর যখন সর্বত্র জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যের কথা বলা হচ্ছে, তখন ছাত্রলীগ লিপ্ত হয়েছে হানাহানিতে। গত সাড়ে সাত বছরে ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলে প্রাণ হারালেন অন্তত ৫৫ নেতা-কর্মী। এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে বন্ধ ছিল অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
কুমিল্লায় ছাত্রলীগের নিহত নেতার নাম মো. খালিদ সাইফুল্লাহ (২৪)। এ ঘটনাকে দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নিজেদের মধ্যে এমন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নেয়। কুমিল্লায় কেন এ ঘটনা ঘটল, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত ১৭ জুলাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে অন্তত ২৩ জন বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার আসামি স্থান পান। ওই কমিটি গঠনের পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা দিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও টানা পাঁচ দিন অবরোধ করে রাখেন পদবঞ্চিত নেতারা। অবরোধের মধ্যে শাটল ট্রেনে হামলায় দুই রেলকর্মী আহত হন। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসে ছাত্রলীগ অবরোধ প্রত্যাহার করে।
১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকাকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের গাড়ি ভাঙচুর করে তাঁর বাসভবনে ঢোকার প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার তিন সপ্তাহ পর একটি তদন্ত কমিটি হলেও অন্যান্য কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের মতো এই প্রতিবেদনেরও ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন একাধিক শিক্ষক।
দেড় বছরে ১৫ হত্যা: গত দেড় বছরে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ১৫ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে এ বছর মারা গেছেন আটজন, গত বছর মারা যান সাতজন। এ বছরের ২৭ মে বরিশালে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম মারা যান। ২৯ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াসা মোড় ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারান ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম নগর কমিটির উপসম্পাদক নাসিম আহমেদ সোহেল। এর আগে ২১ মার্চ নোয়াখালী সরকারি কলেজের পুরোনো ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সদস্য ফজলুল হুদা রাজিব, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য সাইফুল ইসলাম ওয়াসিম ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ইয়াসিন মারা যান। ১৯ জানুয়ারি সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে প্রতিপক্ষের হামলায় ছাত্রলীগের কর্মী কাজী হাবিবুর রহমান মারা যান। ২০ মার্চ ছাত্রলীগের বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মশাজান-নোয়াবাদের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় তাসপিয়া প্রমি নামে পাঁচ মাসের এক শিশু নিহত হয়। হত্যাকাণ্ড ছাড়াও চলতি বছরে ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের শতাধিক ঘটনা ঘটেছে।
ক্ষমতায় আসার পর অন্তঃকোন্দল জোরদার: ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ছাত্রলীগে অন্তঃকোন্দল ও সংঘর্ষ বেড়ে যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে গত সাড়ে সাত বছরে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা গেছে, ওই বছর থেকে গতকাল ১ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্রলীগের সঙ্গে প্রতিপক্ষ বা নিজেদের মধ্যে প্রায় ৫০০ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব সংঘর্ষে মোট ৭১ জন মারা যান। এর মধ্যে ৫৫ জনই নিহত হন নিজেদের কোন্দলে। ২০০৯ সালে ৪ জন, ২০১০ সালে ১২, ২০১১ সালে ৫, ২০১২ সালে ৮, ২০১৩ সালে ৩, ২০১৪ সালে ৮ এবং ২০১৫ সালে ৭ জন অন্তঃকোন্দলে মারা গেছেন। বাকিরা প্রতিপক্ষের কর্মী অথবা সাধারণ মানুষ।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান অবশ্য দলীয় বা অন্তঃকোন্দল বলতে নারাজ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইলিয়াস হামলা চালিয়েছেন। তিনি ছাত্রলীগের কেউ নন। তাঁর মতে, যেসব জায়গায় হামলা ও মারামারি হচ্ছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বহিরাগত বা সন্ত্রাসীরাই তা ঘটাচ্ছে। এ জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করা যাবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ছাত্র খুন হওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন বা কয়েকজনকে বহিষ্কার করেই দায় শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত সাড়ে সাত বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যা মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলার বিচারের নজির নেই। ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগের কর্মী জুবায়ের হত্যা মামলার রায়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ জনকে ফাঁসি ও ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এর আগে স্বাধীনতার পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেড় শতাধিক ছাত্র হত্যার ঘটনা ঘটলেও সেগুলোর বিচার হয়নি।
গত সাড়ে সাত বছরে ছাত্রলীগের সংঘাত-সংঘর্ষের কারণে অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। একাধিকবার বন্ধের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় চারবার করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়।
গত এক বছরে শুধু ছাত্রলীগের সংঘর্ষের কারণে বন্ধ হয়েছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, রংপুর মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ।
শুধু খুনোখুনি নয়, অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, ভর্তি-বাণিজ্য, শিক্ষক লাঞ্ছনা, সাংবাদিক-পুলিশের ওপর হামলাসহ নানা বিতর্কিত ঘটনায় যুক্ত ছিল ছাত্রলীগ। এসব ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন সময় সংগঠন থেকে ৪০০ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হলেও পরে আবার তাঁরা ফিরে আসেন নিজ নিজ ক্যাম্পাসে। খুনের মামলার আসামি পরে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন, এমন নজিরও আছে।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয় নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, প্রতিযোগিতা ও আধিপত্যের কারণে এসব ঘটনা ঘটে। আমরা প্রতিটি ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি।’ তাঁর মতে, ঢাকার অবস্থা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। ঢাকার বাইরে কোথাও কোথাও এমন ঘটনা ঘটছে।
যেসব কারণে সংঘর্ষ: অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আধিপত্য বিস্তার, ভর্তি-বাণিজ্য ও দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, চাঁদাবাজি—এসবকে কেন্দ্র করেই বেশির ভাগ সংঘর্ষ হয়েছে। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছাত্রদের জন্য প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ছাত্রাবাস নির্মাণকাজের দরপত্রের ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে ওই সংঘর্ষ। ২০১৩ সালের ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত হয় এক শিশু। এর নেপথ্যেও ছিল দরপত্র ও নিয়োগ-বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগি। ঢাকায় খাদ্য ভবনে ২ কোটি ৮০ লাখ টাকার ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের বরিশাল ও ফরিদপুর পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ হয়েছে। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়েও নিয়োগ-বাণিজ্য নিয়ে ছাত্রলীগে কোন্দলের ঘটনা ছিল নিয়মিত। ভর্তি-বাণিজ্য নিয়ে বিভিন্ন সরকারি কলেজে সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে।
ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটিরই অনেকের অভিযোগ, গঠনতন্ত্র না মানা, সংগঠনের সদস্যদের কোনো তালিকা না থাকা, বছরের পর বছর ধরে মেয়াদহীন জেলা কমিটি, স্থানীয় সাংসদ ও প্রভাবশালী নেতাদের রাজনীতি এবং নেতা-কর্মীদের একটা অংশের যেকোনোভাবে অর্থ আয়ের চেষ্টা—এসব কারণেই হানাহানির ঘটনা ঘটছে।
এসব ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ষাটের দশকে ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে আজকের ছাত্রলীগের রাজনীতি যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছে। তখন ছাত্রলীগ আদর্শের রাজনীতি করত। আওয়ামী লীগও তাতে প্রভাবিত হতো। বঙ্গবন্ধু নিজে ছাত্রলীগের কথা শুনতেন। কিন্তু এখন উল্টোটা হচ্ছে।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ: ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত খালিদ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী এবং কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার তুজারভাঙা এলাকার বাসিন্দা দাউদকান্দি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মাওলানা মো. জয়নুল আবেদীনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে রোববার রাত ১২টা ১ মিনিটে শোকের মাস আগস্ট উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের ছাত্রলীগের স্বঘোষিত সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একটি অংশ পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রসহ অতর্কিতে বঙ্গবন্ধু হলে প্রবেশ করে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের অপর একটি অংশ পাল্টা আক্রমণ চালায়। দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় ও সংঘর্ষের মধ্যে হলের দ্বিতীয় তলায় টেলিভিশন কক্ষের সামনে মাথায় গুলি লাগে খালিদের। এ সময় আরও গুলিবিদ্ধ হন লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান, আহত হন আরও নয়জন।
সংঘর্ষের ঘটনায় গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের জরুরি সভা হয়। উপাচার্য মো. আলী আশরাফের সভাপতিত্বে সভা শেষে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কণ্ডু গোপী দাসকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন মজুমদার সংঘর্ষের ঘটনায় সদর দক্ষিণ মডেল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পুলিশ তিনটি হলে তল্লাশি চালায়। এ সময় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল থেকে ৪০টি রামদা ও ছুরি, বঙ্গবন্ধু হল থেকে ১টি ৭ দশমিক ৬৫ বোরের ভারতীয় পিস্তল, ১টি ম্যাগাজিন, ১টি গুলি ও ৬০টি ছুরি, রামদা এবং কাজী নজরুল ইসলাম হল থেকে চায়নিজ কুড়াল, চাপাতি ও ৩০টি রামদা উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন হল থেকে ১২ জনকে আটক করে পুলিশ।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৭ সালে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়। সেখানে যাঁরা ভর্তি হন, তাঁদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি অঙ্গীকারনামা নেয়। এতে উল্লেখ রয়েছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতি ও ধূমপানমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি শুরু হয়। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে অন্তত ৫০ বার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন শতাধিক শিক্ষার্থী।
সহপাঠীদের বিক্ষোভ ও খালিদের দাফন: দাউদকান্দি প্রতিনিধি জানান, গতকাল বেলা তিনটার দিকে খালিদের লাশ কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তুজারভাঙা গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে দাউদকান্দি কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে খালিদের লাশ দাফন করা হয়।
সাড়ে সাত বছরে অন্তঃকোন্দলে মৃত্যু ৫৫
২০১৬ ৮
২০১৫ ৭
২০১৪ ৮
২০১৩ ৩
২০১২ ৮
২০১১ ৫
২০১০ ১২
২০০৯ ৪