২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগ থেকে নিখোঁজ হওয়া আটজনের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতাও রয়েছেন। বাকিরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র।
পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব তাদের তুলে নিয়ে গুম করেছে বলে নিখোঁজ লোকদের পরিবারগুলো অভিযোগ করছে। তারা বলছেন, তাদের স্বজনদের খুঁজে বের করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দিক থেকে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না ।
তবে র্যাব বা পুলিশ বরাবরই এ ধরণের কোন ঘটনার কথা অস্বীকার করে আসছে।
ওই ঘটনার এক বছর উপলক্ষে একটি সেমিনারেরও আয়োজন করে একটি মানবাধিকার সংগঠন। অনুষ্ঠানে আটটি পরিবার তাদের হতাশার কথা বর্ণনা করেন ।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বিভিন্ন সময়ে গুম হয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলোর সাথে করা জড়িত সেটি খুঁজে বের করার কোন চেষ্টা তারা সরকারের দিক থেকে দেখছেন না ।
স্বজনদের গুম হয়ে যাবার বিষয়টি বর্ণনা করতে গিয়ে অঝোরে কেঁদেছে প্রতিটি পরিবার। কারও মা, কারও স্ত্রী কিংবা বোন ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। প্রতিটি ঘটনাতেই তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষ করে র্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন।
তিতুমীর কলেজের ছাত্র আব্দুল কাদের ভূঁইয়া মাসুমের মা আয়েশা আলী এখন শুধু জানতে চান তার ছেলের পরিণতি কি হয়েছে।
আয়েশা আলী বলেন , “আমাদের সন্তান বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে, সেটি জানার অধিকার কি আমাদের নেই? ”
ঢাকার ৩৮নং ওয়ার্ডের একজন বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন গুম হয়েছেন এক বছর আগে । তার বোন সানজিদা ইসলাম বলেন তাদের পরিবার এখনও আশা করছে সুমন ফিরে আসবে ।
কিন্তু মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন মনে করেন, এ ধরনের অস্বীকার করার সুযোগ নেই । তিনি বলেন গুম হবার সব ঘটনায় অভিযোগ করা হচ্ছে না। যেসব ঘটনার সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সম্পৃক্ততা নিয়ে সন্দেহ আছে সেগুলোর ব্যাপারেই অভিযোগ করা হচ্ছে।
গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সাথে সহমর্মিতা দেখাতে এসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার । তিনি বলেন, ঘটনা অস্বীকার করলে এর প্রবণতা বাড়তে থাকবে ।
তিনি বলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিণীর ছদ্মবেশে যদি অপরাধীরাও এ ধরনের কাজ করে থাকে তাহলে সেটি তাদেরই দায়িত্ব খুঁজে বের করা
মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন একটি নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন করে গঠন করে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা উচিত । তাহলে গুম হবার ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করা যাবে বলে তারা মনে করেন।