বাংলাদেশে উপজেলা নির্বাচনের পঞ্চম ধাপে ব্যাপক কারচুপি এবং অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’।
আজ ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ’ বলেছে, সর্বশেষ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির হার ছিল প্রায় ৫৩ শতাংশ।
গত ৩১শে মার্চ পঞ্চম পর্যায়ের ভোটের দিন ৩৪টি উপজেলায় এক হাজারের মতো কেন্দ্রে পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছিল ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ। এই পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর একজন মুখপাত্র নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বিবিসিকে জানিয়েছেন, তাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতেই তারা উপজেলা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির ধারণা পেয়েছেন।
মি. কলিমুল্লাহ বলেন, এসব কেন্দ্র গড়ে ৬৩ দশমিক সাত শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত ভোট পড়েছে এর চেয়ে অনেক কম। ব্যাপক হারে জাল ভোট দেয়ার কারণে ভোট দানের হার এত বেশি দেখা গেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পঞ্চম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট ৭৩টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোটের দিন সহিংসতায় একজন নিহত হb এবং বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণও স্থগিত করা হয়।
তবে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি আর কেন্দ্র দখলের পরস্পরবিরোধী অভিযোগ তুলেছে রাজনৈতিক দলগুলো।
তবে মি. কলিমুল্লাহ বলছেন, এসব সহিংসতা এবং জালিয়াতির জন্যে কারা দায়ী, সে বিষয়টি তারা এখনো সনাক্ত করতে পারেননি। পর্যবেক্ষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। সামনেই হয়তো ষষ্ঠ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সে সময় পাওয়া তথ্য মিলিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। সেখানেই এ বিষয়গুলো থাকবে।
ইলেকশন ওয়ার্কি গ্রুপের প্রতিবেদনে, যেসব উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে বলা হচ্ছে, তার একটি লক্ষীপুরের সদর। তবে লক্ষীপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম টিপু সুলতান বলছেন, তার জেলায় জালিয়াতির বা সহিংসতার ঢালাও অভিযোগ তোলা হয়েছে যা ঠিক নয়।
মি. সুলতান বলছেন, নির্বাচনের আগে নিরাপত্তার সব ধরণের ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছিল। বিছিন্ন কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু সেটা তেমন বড় কিছু নয়। জালিয়াতির যে কথা বলা হয়েছে, তার আসলে কোন ভিত্তি নেই। নির্বাচনে অনিয়মের দুই-একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, সেসব ক্ষেত্রে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। সহিংসতার কথাও ঢালাও ভাবে বলা হচ্ছে, কারণ অতীতে লক্ষীপুরের নির্বাচনগুলোতে যে ধরণের সহিংসতা হয়েছে, এবার কিন্তু তা হয়নি।
কোন রাজনৈতিক দলকে দায়ী না করলেও, স্থানীয় নেতাদের পক্ষে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাজ করারও অভিযোগ করেছে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ। তবে প্রতিবেদনটি হাতে না পা্ওয়া পর্যন্ত কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি নির্বাচন কমিশন।