দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগের নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। শারীরিক ও মানসিক দুই ধরণের নির্যাতনের ঘটনাই ঘটছে। এর মধ্যে নির্যাতনে একজন শিক্ষার্থীর একটি চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। র্যাগিং এর শিকার হয়ে আরেকজন শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র এহসান রফিককে মঙ্গলবার রাত থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আটকে রেখে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ রয়েছে।
নির্যাতনে এহসানের ডান চোখ সম্পূর্ণ বুজে গেছে। মুখ আর ঠোটের নানান জায়গাতে আঘাতের চিহ্ন।
শরীরে আঘাত আর মনে ভীতি নিয়ে এহসান ইতিমধ্যেই কর্তৃপক্ষের কাছে তার হল পরিবর্তনের জন্য আবেদন করেছেন।
অন্যদিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
ঘটনার পর থেকে তিনি নিজের বাবা আর আত্মীয়স্বজন কাউকেই চিনতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন তার সহপাঠীরা।
উল্লেখিত দুইজন শিক্ষার্থীই চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুইটি ঘটনাতেই গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি রোববার কাজ শুরু করেছে।
আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে আজ। স্বাক্ষ্যগ্রহন চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের করা তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী এবং অভিযুক্ত ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
পর্যাপ্ত স্বাক্ষ্য প্রমাণের পরই তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হবে।
তিনি স্বীকার করেছেন, হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারি ও ভয়ের পরিবেশ রয়েছে।
পরিস্থিতি সামলে রাখার জন্য সার্বক্ষণিক শিক্ষকেরা হলে থাকেন না, যে কারণে এ ধরণের ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানিয়েছেন।
র্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
এর একটির প্রধান অধ্যাপক গোলাম মোয়াজ্জেম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন এবং ছাত্র ও শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতির কারণে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
এবং বেশিরভাগ সময় সেগুলো বিচার করা যায় না।
তবে, তিনি জানিয়েছেন, তারা যথার্থ কারণ বের করে প্রকৃত দায়ীদের খুঁজে শাস্তির সুপারিশ করবে