কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জেলা পরিষদের জমি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নামে দখলের পাঁয়তারা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি দুই সংগঠনের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে শামিয়ানা টানিয়ে জায়গাটি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে প্রশাসনের চাপে সাইনবোর্ড সরিয়ে নিলেও জায়গার দখল ছাড়েনি তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরেজমিন গিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই জমি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ জমির মালিকানা নিয়ে উপজেলার সৈয়দগাঁও গ্রামের মৃত ইছাম উদ্দিনের ছেলে সজল মিয়ার সঙ্গে জেলা পরিষদের মামলা-মোকদ্দমা চলছিল। এ সুযোগ নিয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক একরাম হোসেন টিপুর নেতৃত্বে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী জায়গাটি দখলের চেষ্টা চালায়। তারা গত সপ্তাহে সেখানে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়।
জেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর বাজারে পাকুন্দিয়া-মঠখোলা সড়কের পশ্চিম পাশে জেলা পরিষদের সাত শতক জায়গা রয়েছে। ওই জায়গায় ব্রিটিশ আমলে একটি ইন্দিরা (কূপ) স্থাপন করা হয়। কালের বিবর্তনে ইন্দিরাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জায়গাটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই প্রভাবশালীরা জায়গাটুকু দখলের চেষ্টা করে আসছে। এরই মধ্যে অন্তত অর্ধেক জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। বাকি জায়গাটুকু নিয়ে বর্তমানে ত্রিমুখী লড়াই চলছে।
গত বুধবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হাফিজুর রহমান ওই এলাকা পরিদর্শন করে সব স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিলেও কোনো কাজ হয়নি।
তবে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক একরাম হোসেন টিপু দাবি করেন, জেলা পরিষদের জায়গা তাঁরা দখল করেননি। যে জায়গার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে তারা আড্ডা দেওয়ার জন্য শামিয়ানা টানিয়েছিলেন। তবে এ ব্যাপারে জেলা পরিষদ থেকে কোনো অনুমতি নেননি বলে স্বীকার করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্নপূর্ণা দেবনাথ জানান, জেলা পরিষদের জায়গা কারো দখল করার সুযোগ নেই। প্রকৃত মালিকের দখলেই যাবে এ জায়গা।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য মো. হাদিউল ইসলাম জানান, জায়গাটুকু জেলা পরিষদের নামে রেকর্ড রয়েছে। জেলা পরিষদ কারো কাছে বিক্রি বা ইজারা দেয়নি। সুতরাং এসব দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শিবির বিচিত্র বড়ুয়া জানান, ওই জায়গা থেকে সব কিছু সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার পরও এসি ল্যান্ডকে বলা হয়েছে সেখানে যেন কোনো অবৈধ স্থাপনা কেউ নির্মাণ করতে না পারে। প্রকৃতপক্ষে জমিটুকু কার জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার এখনো জমির কাগজপত্র দেখার সুযোগ হয়নি।’