বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় আনার জন্য ২০১৪ সালে হিন্দু সম্প্রদায় নজিরবিহীন ভূমিকা রেখেছে। এরপরও হিন্দু নির্যাতন বন্ধ হয়নি বরং অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। অভিযোগ বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, একাত্তরের পরে দেশে যতোগুলো সরকার এসেছে তারা কেউ হিন্দুদের কোনো দাবি মেনে নেয়নি। সবার আমলে নির্যাতন হয়েছে। এমনকি তারা সবাই হিন্দুদেরকে ক্ষমতার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে।
তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, অতীতের যত সরকার এসেছে তাদের সবার আমলে হিন্দুরা নির্যাতিত হয়েছে। তার মধ্যে এই সরকারের সময় বেশি হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে ৮৮ জন হত্যার শিকার হয়েছে, হত্যার হুমকি ২৮০ জন, হত্যার চেষ্টা ৮০ জন, আহত করা হয়েছে ৩৪৭ জন, নিখোঁজ হয়েছে ৪৮ জন, আটক রেখে নির্যাতন হয়েছে ১১১ জন, চাঁদাবাজি হয়েছে ৪০ লাখ টাকা, লুট ও সম্পত্তির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে চল্লিশটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে।
তিনি আরো বলেন, ২৭৩৪.৮০ একর সম্পত্তি দখল হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৯ কোটি টাকার ভূমি বেদখল হয়েছে। ঘর-বাড়ি দখলের ঘটনা ঘটেছে ৭টি, উচ্ছেদের চেষ্টা ৯৬৯০ পরিবার, নিরাপত্তাহীনতায় ১৫১০ পরিবার, মন্দিরে হামলা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১৩১টি, ২৯টি ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ২১ জনকে, গণধর্ষণ করা হয়েছে ৪ জনকে, জোরপূর্বক ধর্মান্তর করা হয়েছে ২৪ জনকে।
এ সময় তারা দাবি জানান, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে, একটি সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, ১৯৭২ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত পূর্বক বিচার করার জন্য একটি স্বাধীন সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, সিনিয়র সহ-সভাপতি সোনালী দাস, ডাক্তার মৃত্যুঞ্জয় রায়, প্রদীপ কুমার পাল, মিঠু রঞ্জন দেব প্রমুখ।