আমরা জানি এবং শুনেছি মা দুর্গা প্রত্যেক বছর কোনও না কোনও বাহনে চড়ে আমাদের এই বসুন্ধরায় আসেন। এবার আমাদের দেবী এসেছেন গজে চড়ে।
বুধবার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, গজে চড়ে এলে জানি এই পৃথিবী ধন-ধান্যে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি। এবার ফসল ভালো হয়েছে। মানুষ সুখে শান্তিতে আছে। দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে সাত ভাগ।
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ থেকে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস দুর্নীতি দূর করা করতে মহাজোট সরকার সক্ষম হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘এসব নিয়ে আমাদের যে দুর্নাম ছিল তা আমরা ঘোচাতে সক্ষম হয়েছি। বিশ্ব সভায় আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশ সম্মানিত হয়েছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে উপস্থিত নারীরা উলুধ্বনি ও করতালি দিয়ে তার বক্তব্যকে স্বাগত জানান।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাসী।’
সারা দেশে ২৮ হাজারেরও বেশি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গা উৎসব পালিত হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘হিন্দুরা দুর্গা উৎসব পালন করছে। মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলেই এ উৎসবে অংশগ্রহণ করছে। সকলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ এটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত চার দলীয় জোট সরকারের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, আমাদের পূর্বে যে সরকার ছিল তাদের সময় বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে সেই দুর্নাম ঘোচাতে পেরেছি। এখন আর বাংলাদেশ কোনও সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের দেশ নয়।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ শান্তি সম্প্রীতির দেশ। আর এই শান্তি সম্প্রীতি সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছে। আশা করি আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকবো। ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।
দেশে এবার শান্তিপূর্ণভাবে পুজো হওয়ার জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে ধন্যবাদ জানান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত।
তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত দেশের কোনও স্থান থেকে আমরা কোনও অঘটনের সংবাদ পায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুষ্ঠানে সাধারণত মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। কিন্তু ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দর্শকদের মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশে কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
তবে মন্দিরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে মোবইল ফোনের নেটওয়ার্কগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান মিয়া, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত, আইনপ্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, সংসদ সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু প্রমুখ।