চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূ ধর্ষণের দায় আদালতে স্বীকার করেছে সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ ক্যাডার সুমন মোল্লা। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের বরিশালের বানারীপাড়া শাখার সভাপতি এই ঘটনায় আদালতে ৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
বানারীপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সুমন মোল্লাকে সোমবার বিকেলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হয়।
টেম্পু চালক সেলিম জানান, চট্টগ্রামে অটোরিকশা চালাতে গিয়ে পরিচয় হয় তার সঙ্গে ওই নববধূর। আট থেকে নয় মাস আগে দুইজন বিয়ে করেন। সম্প্রতি সেলিম স্ত্রীকে নিয়ে নানাবাড়ি উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের বেতাল গ্রামে বেড়াতে যান। ওই সময় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন মোল্লা দলবল নিয়ে সেলিমের কাছে চাঁদা দাবি করেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ধর্ষণের সময় সুমন মোল্লা ধর্ষিতাকে বলেন, ‘তোর স্বামী টেম্পু চালিয়ে কি আর দিতে পারবে। আমি তো আছি। আমি তোর দেখভাল করুম। যখন লাগবে চলে আসবি, আর এই কথা কাউকে বলতেও পারবি না। টাকা লাগলে আমি দেবো।’
গত শনিবার সন্ধ্যায় সেলিম তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হলে ছাত্রলীগ সভাপতি সুমন মোল্লা ও তার সহযোগীরা দুইজনকে ধরে নিয়ে একটি বাড়িতে আটকে রেখে নববধূকে ধর্ষণ করে।
বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা রোববার বেলা ১১টার সময় এই দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বিকেলে ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে মামলা করেন। আর পুলিশ বরিশাল নগরী থেকে গ্রেফতার করে সুমন মোল্লাকে।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলামের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে সুমন মোল্লা। এরপর তাকে জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। এ সময় ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেয়া হয়। আর গৃহবধূকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় বানারীপাড়া থানায় সুমন মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের জরুরি সভা হয়। তারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে তার বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ পাঠায়। পরে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। কারও ব্যক্তিগত দায় দল নেবে না বিধায় সুমন মোল্লাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক।